ভালুকা প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার অজাতউপজেলার শিশু হত্যা ঘটনার মামলার একমাস পেরিয়ে গেলেও আসামি গ্রেফতারে ব্যর্থ মডেল থানা পুলিশ। বাদীপক্ষের অভিযোগ আসামি প্রকাশ্য ঘুরে বেড়াচ্ছে অথচ তাকে গ্রেফতারের বিষয়ে পুলিশের কোন তৎপরতা নেই।জানা যায়, রাস্তা সংক্রান্ত বিষয়ে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে উপজেলার গোয়ারী ( জুনারটেক) এলাকার হক মিয়ার পরিবারের সাথে একই এলাকার মোবারক হোসেনের পূর্ব থেকেই বিরোধ চলে আসছে।
ঘটনার দিন ২৮ শে জুন সকাল দশটার দিকে বিবাদী ফাহাদ ও তার মা হেলেনা খাতুন হক মিয়ার বাড়িতে এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করলে হক মিয়ার মেয়ে দিলরুবা আক্তার ও তার মা ছাহেরা খাতুন সেটার প্রতিবাদ করলে এক পর্যায়ে বিবাদীদ্বয় দিলরুবার মাকে মারপিট শুরু করে । মাকে মারতে দেখে নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা দিলরুবা আক্তার ওদের থামাতে এগিয়ে গেলে বিবাদী ফাহাদ তাকে তলপেটে লাথি মেরে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। সাথে সাথে প্রচন্ড পেটব্যথায় দিলরুবা মাটিতে পড়ে কাতরাতে থাকলে তার বাবা মোবারক হোসেন ও কয়েকজনের সহযোগিতায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
পরবর্তীতে দিলরুবার পেট ব্যথা চরম আকার ধারণ করায় ১ লা জুলাই তার স্বামী শিহাবুল ইসলাম শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে দিলরুবা আক্তার কে নিয়ে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করান। বিভিন্ন পরিক্ষা নিরীক্ষা করে চিকিৎসক গর্ভে থাকা শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন এবং সিজার করার পর মৃত শিশুকে কবর দেয়া হয়।এ ঘটনায় স্বামী শিহাবুল ইসলাম বাদী হয়ে ৪ জুলাই ফাহাদ ও তার মা হেলেনাকে আসামি করে ভালুকা মডেল থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেন।৫ জুলাই মামলাটি এফ আই আর করা হয় এবং এস আই কাজলকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগেই গর্ভে থাকা প্রথম সন্তানের মৃত্যুর এ মর্মান্তিক ঘটনায় দিলরুবার কান্না আহাজারিতে বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে।
এ ব্যাপারে কান্নাজড়িত কন্ঠে দিলরুবা জানান, ঘটনার দিন বিবাদিদ্বয় আমার মাকে মারধরের সময় আমি প্রতিবাদ করলে বিবাদী ফাহাদ আমাকে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেয়।এ ঘটনায় আঘাতজনিত কারণে আমার গর্ভে থাকা শিশুর মৃত্যু ঘটে।মামলার পর ও আসামি ফাহাদ দাপটের সঙ্গে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।বার বার আমি এস আই কাজলকে ফোন দেওয়ার পর ও আসামি গ্রেফতার করার ব্যাপারে তার কোন তৎপরতা নেই।
মামলার বাদী শিহাবুল ইসলাম তার স্ত্রীকে মারধর ও গর্ভের সন্তানের মৃত্যু ঘটানোর জন্য প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করে বলেন, আমার গর্ভবতী স্ত্রীকে মারধর ও অজাত সন্তানকে হত্যার জন্য অপরাধী ফাহাদের দৃষ্টান্ত শাস্তি চাই।এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই কাজল জানান, এজাহারের প্রেক্ষিতে মামলা রুজু করা হয়েছে। সঠিক সাক্ষীর অভাবে মামলার সত্যতা নিশ্চিত করা যাচ্ছেনা । আসামি ফাহাদ ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। বিবাদীদের নাম্বারে বার বার চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। উল্লেখ্য, পুরো একমাসের উপরে সময় অতিবাহিত হলেও আসামি প্রকাশ্য ঘুরে বেড়ালেও রহস্যজনক কারণে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছেনা বলে জানিয়েছেন বাদীর পরিবার।